Image of মো: সাব্বির হাওলাদার

নাম: মো: সাব্বির হাওলাদার

জন্ম তারিখ: ১৬ ডিসেম্বর, ২০০১

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৭ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা_সিটি

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : শ্রমিক শাহাদাতের স্থান : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঢামেক

শহীদের জীবনী

শহীদ পরিচিতি শহীদ মোহাম্মদ সাব্বির হাওলাদার ভোলা জেলার পশ্চিম চরফ্যাশন থানার লালমোহন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জসিম হাওলাদার ও মাথা সাবিনা বেগম। দুই ভাইয়ের মধ্যে সাব্বির ছিলেন বয়সে বড়। অল্প বয়সে বিয়ে করে সংসার শুরু করেছিলেন। মেয়ের মুখে বাবা ডাক শোনার আগেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সাব্বির হাওলাদারকে। অর্থনৈতিক অবস্থা সাব্বির হাওলাদার পেশায় শ্রমিক, জন্মেছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে। নিজগ্রামে বসতভিটা বা চাষের জমিও নেই তাদের, তাই জীবিকার তাগিদে ঢাকার কদমতলী থানার জুরাইনে বস্তিতে থাকতেন। মা সাবিনা বেগম মেসে রান্নার কাজ করে সামান্য উপার্জন করতেন যা দিয়ে তিনি সন্তানদের লালন পালন করতেন। সাব্বির হাওলাদারের পিতা বহু আগেই অন্যত্র বিয়ে করেন এবং তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। মায়ের এই হাড়ভাঙা খাটুনি আর অবর্ণনীয় দুঃখ দেখে নিজেও কাজে লেগে যান। ওয়ার্কশপে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ছোট ভাই রিকশা চালিয়ে আরও একটু সহযোগিতা করার চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে সাব্বির হাওলাদার বিয়ে করেন মেঘলাকে। মেঘলা ও সাব্বিরের একমাত্র কন্যার বয়স মাত্র এক মাস। সাব্বিরের মৃত্যুতে পিতৃহীন হয়ে পড়েছে ছোট এই শিশু। বাবার স্নেহের স্পর্শটা হয়তো সে কোনদিনই মনে করতে পারবে না। প্রাণপ্রিয় স্বামীকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে ১৮ বছর বয়সী স্ত্রী মেঘলা। আর ছেলে হারানোর শোক যেন কিছুতেই কাটাতে পারছেন না সাব্বির হাওলাদারের মা। ঘটনা সংক্রান্ত বিবরণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুরো জুলাই মাস জুড়ে সারাদেশে আওয়ামী লীগের তান্ডব, নির্যাতন, গ্রেফতার, ছাত্র-জনতাকে হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের ঘটনার সাক্ষী হয় জনগণ। জুলাই মাসের একেবারেই শেষ দিকে নয় দফা দাবি পেশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যা ৩ আগস্ট এক দফায় রূপ নেয়। খুনি ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগ-ই ছিল সেই একদফা। উত্তাল সারাদেশে আবারো নতুন করে বিপ্লবী ঢেউ আসে। তারই প্রেক্ষিতে পরদিন রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল হয়। স্বৈরাচার হাসিনার মদদপুষ্ট পুলিশ, বিজিবিসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের গুলি করে। সেদিন সারাদেশে ১৩০ জন ছাত্রজনতা খুন হয়। ৪ আগস্ট সকালে শহীদ সাব্বির হাওলাদার তাঁর মায়ের কাছে খিচুড়ি খাওয়ার আবদার করে ঘর থেকে বের হন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত জামায়াত-শিবিরকে ১ আগস্ট নিষিদ্ধ করে ৪ আগস্ট শেখ হাসিনা গণহত্যা চালানোর পরিকল্পনা নেয়। সারাদেশে সাহসী ছাত্র-জনতার উপর যুদ্ধক্ষেত্রের মতো সমস্ত ভয়ংকর অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সাব্বির আন্দোলন সম্পর্কে খোঁজ রাখতেন। তিনি জানতেন শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত না হলে দেশের মানুষের মুক্তি নেই। সকাল ১১ টায় আন্দোলনে যুক্ত হতে আসেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে কাজলা এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয় তাঁকে। হাসপাতালে তখন হাজার হাজার মানুষ আহত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে কাতরাচ্ছিলো, যাদের সবাই ছিলো আন্দোলনকারী। চারপাশে কারবালার প্রান্তরের মতো হাহাকার! ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে তাদেরকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। যার ফলে তারা ধুঁকে ধুঁকে মরছিলো হাসপাতালে মেঝেতেই। তাদেরই একজন ছিলেন সাব্বির হাওলাদার। দুইদিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসার অভাবে মারা যান তিনি। সাব্বির বিজয়ের খবর শুনেছেন। কিন্তু গুলির আঘাতের যন্ত্রণায় যেন বিজয়ের আনন্দ ম্লান হয়ে গিয়েছিল। ৭ আগস্ট বিকাল ছয়টায় তিনি শাহাদাত বরণ করেন। জানাজা শেষে জুরাইন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শহীদ পরিবারকে সাহায্যের প্রস্তাবনা ১.ছোট ভাইয়ের স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করে দেয়া ২.এতিম শিশুর লালন পালনের দায়িত্ব নেয়া একনজরে শহীদের পরিচয় পুরো নাম : সাব্বির হাওলাদার পিতার নাম : জসিম হাওলাদার মাতা : সাবিনা বেগম পরিবারের সদস্য : ১. স্ত্রী (মেঘলা) : ২. কন্যা (শেহজা মুনতাহা, বয়স: ১ মাস) : ৩. ভাই (জুয়েল-রিক্সাচালক) : ৪. মা ঠিকানা : গ্রাম: লালমোহন, থানা: চরফ্যাশন, জেলা: ভোলা বর্তমান ঠিকানা : এলাকা: খালপাড়, জুরাইন, থানা: কদমতলী, জেলা: ঢাকা আহত হওয়ার স্থান ও তারিখ : কাজলা, ঢাকা (৪/৮/২০২৪) আক্রমনকারী : পুলিশ নিহত হওয়ার স্থান ও তারিখ : ঢামেক, ৭/৮/২০২৪ সমাধি : জুরাইন কবরস্থান

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: সাব্বির হাওলাদার
Image of মো: সাব্বির হাওলাদার
Image of মো: সাব্বির হাওলাদার

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: আসিব মিয়া

অজ্ঞাত

আবু বকর রিফাত

অজ্ঞাত

মো: সোহেল রানা

মো: মাসুদ

সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন

জাবির ইব্রাহিম

মেহেরুন্নেসা তানহা

মিরাজ হোসেন

শাহরিয়ার হাসান আলভী

 জোবাইদ হোসেন ইমন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo