Image of শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ

নাম: শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ

জন্ম তারিখ: ৮ অক্টোবর, ২০০৯

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা_সিটি

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: ব্যবসা শাহাদাতের স্থান : চানখারপুল, বুরহান উদ্দিন কলেজের সামনে, ঢাকা

শহীদের জীবনী

শহীদ পরিচিতি শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ (১৪) যাত্রাবাড়িতে অবস্থিত উইল পাওয়ার স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়। মেহেদীর বাবা জনাব মোঃ জামাল উদ্দিন এবং মা সানিয়া জামাল। গেন্ডারিয়া ধুপখোলা পুকুরের পূর্ব পাশে পরিবারটি বসবাস করে। ফেরাউন তার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে শিশুহত্যাও দ্বিধা করেনি। বাংলাদেশের ফেরাউন সরকার হাসিনাও একই কাজ করেছেন। অসংখ্য শিশু-কিশোরকে খুন করেছেন। কিশোর শহীদদের তালিকায় জুনায়েদ অন্যতম। জুনায়েদের শাহাদাতকে স্মরণ করতে এলাকাবাসী পুকুরের পাশে চত্ত্বরটিকে জুনায়েদ চত্ত্বর নাম দিয়েছে। যেভাবে শহীদ হলেন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে সকল প্রকার নিন্দনীয় কাজ করে গেছেন। তার নির্দেশে সকল অপকর্ম হতো। দেশের মানুষের উপরে নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে মানবাধিকারের চরম লংঘন করেছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সমালোচনা করায় তাদেরকে জেলে দিয়েছেন। শিশুরাও তার নির্মমতা থেকে রেহাই পায়নি। শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর। খুনি হাসিনার পুলিশ তাকে হত্যা করতে কোন দ্বিধা করেনি। জুলাইয়ের শুরু থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা আবার পুনর্বহাল করায় ছাত্ররা ক্ষুব্ধ হতে থাকে। শেখ হাসিনা ব্যার্থ চীন সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে কোটাবিরোধী মেধাবী ছাত্রদের রাজাকারের নাতি-পুতি বলে ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে রাত নয়টার দিকে ঢাবির বিভিন্ন হলে শ্লোগান ওঠে, ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার! রাজাকার! কে বলেছে কে বলেছে? স্বৈরাচার স্বৈরাচার!’ ১৬ জুলাই বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদের ডাকা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে ছাত্রলীগের গুন্ডারা হামলা চালায় এবং পুলিশের গুলিতে রংপুরে আবু সাঈদ, চট্টগ্রামে ওয়াসিম, শান্ত, ফারুক ও ঢাকায় সবুজ আলী ও শাহজাহান শাহাদাতবরণ করেন। এরফলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিতাড়ন করে 'রাজনীতিমুক্ত' ঘোষণা করে সাধারণ ছাত্ররা। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের গুন্ডারা পুলিশের সাথে মিলে বিভিন্ন স্থানের ছাত্রদের উপর হামলা চালাতে থাকে। হামলায় ব্যপক আহত ও প্রাণহানী ঘটে। ১৮ জুলাই ৪০ জন এবং ১৯ জুলাই কয়েকশত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়। প্রতিদিন কেউ না কেউ লীগের বাহিনীর হাতে আটক, আহত বা নিহত হতে থাকে। অবৈধ সরকার কয়েক হাজার মামলা দিয়ে গণগ্রেফতার শুরু করে। দেশের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ডিবি কার্যালয়ের ভাতের হোটেলের মালিক উপাধী পাওয়া হারুন ছাত্র নেতাদের আটক করে। সরকার মোবাইল ও ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ২৭ জুলাই পত্রিকার ভাষ্যমতে ১১ দিনে গ্রেপ্তার ৯ হাজার ১২১ জন। আতঙ্কে মানুষ ঘরছাড়া হতে থাকে। সপ্তাহ ধরে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করার কারণে দেশবাসী আতংকের মধ্যে দিন কাটাতে থাকে। শেখ হাসিনা গণহত্যা চালানোর প্রস্তুতি নেয়। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে ভারত নিয়ন্ত্রিত হাসিনা সরকার। জনতা বুঝতে পারে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য। ৪ আগস্ট রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্রজনতার বিক্ষোভ মিছিলে আবারো হামলা চালায় আওয়ামী সন্ত্রাসী। এদিন পুলিশের সাথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের গুলি করে। কিন্তু হাজার হাজার ছাত্র ইট, পাথর, লাঠি সহযোগে সন্ত্রাসী ও হানাদার পুলিশ বিজিবিকে প্রতিরোধ করে। গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর তার বাহিনী নিয়ে হামলা চালাতে আসে। ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করতে থাকে। সাহসী ছাত্র-জনতা জাহাঙ্গীরের সন্ত্রাসী বাহিনীকে পাকড়াও করে। জাহাঙ্গীর মার খেয়ে পলায়ন করে। বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ দেখে স্বৈরাচার সরকারের বাহিনী গণহত্যা চালানোর প্রস্তুতি নেয়। ৪ আগস্ট সারাদেশে অন্তত ১৩০ জন খুন হয়। পরদিন ঢাকামুখী লং-মার্চের কর্মসূচি দেয় ছাত্র জনতা। ৫ আগস্ট সকাল থেকেই ব্যাপক মারমুখী অবস্থান নেয় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। সারা ঢাকা শহরে খন্ড খন্ড যুদ্ধ শুরু হয় ছাত্র জনতার সাথে। দুপুর ১ টায় মানুষ জেনে যায়, হাসিনা পালিয়ে গেছে। চরম আনন্দে সারাদেশে গলিতে গলিতে মিস্টি বিতরণ ও ঈদ মোবারক বলে কোলাকুলি করতে থাকে মানুষ। রাস্তায় রাস্তায় মানুষ সিজদা দিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে থাকে। দেশে বিভিন্ন মোড়ে থাকা স্বৈরাচার মুজিবের সকল মুর্তি ভেঙ্গে দেয় আন্দোলনকারী ছাত্রজনতা। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় ও আত্মগোপন করে। অল্প সংখ্যক ছাত্রজনতার রোষাণলে পড়ে আহত ও নিহত হয়। রাজধানীতে জনতা সংসদ ও গণভবনে হাজির হয়ে শোকরানা নামাজ আদায় করে। শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ ও তার পরিবার স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিলেন। ৫ আগস্ট দুপুরবেলা শেখ হাসিনা দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গেলে সারাদেশে আনন্দ মিছিল বের হলে মেহেদী হাসান একটি মিছিলে যুক্ত হয়। চানখারপুল এলাকায় বুরহানউদ্দিন কলেজ গেইটের সামনের মিছিলে মেহেদী হাসানকে মিছিলের সামনে দেখা যায়। খুনি হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার পোষা পুলিশ বাহিনী ঐ মুহুর্ত্বে সারাদেশে জনতার উপর গুলি চালাচ্ছিল। চানখারপুল এলাকার মিছিল গুলোতেও পুলিশ গুলি বর্ষণ করে। সেখানে অনেক ছাত্র-জনতার পাশাপাশি শেখ মেহেদী হাসানও গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশের একটি গুলি মাথার সামনে দিয়ে প্রবেশ করে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। সাথে সাথেই তার মৃত্যু ঘটে। কেমন আছে তার পরিবার মেহেদীর বাবা শেখ জামাল একটি ডেভেলপার কোম্পানীতে চাকুরী করতেন। বর্তমানে তিনি বেকার অবস্থায় আছেন। ঢাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাটে তিনি পরিবার নিয়ে বাস করেন। মেহেদীর মা সানিয়া জামাল গৃহিণী। তার বড়বোন নাফিসা নাওয়াল (১৭) মতিঝিল আইডিয়াল কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে। বর্তমানে জনাব জামালের পরিবারে কোন আয় নেই। জমা টাকা ভেঙ্গে সংসার চলছে। প্রস্তাবনা ১. মাসিক ও এককালীন সহযোগিতা প্রদান করা ২. বোনের লেখা-পড়ায় সহযোগিতা প্রদান করা একনজরে শহীদের পরিচয় নাম : শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ পেশা : ছাত্র জন্ম তারিখ : ৮ অক্টোবর ২০০৯ পিতা : শেখ জামাল আহসান মাতা : সানিয়া জামাল আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ : ০৫ আগস্ট ২০২৪ শাহাদাত বরণের স্থান : চানখারপুল, বুরহান উদ্দিন কলেজ আক্রমণকারী : পুলিশ দাফন করা হয় : জুরাইন কবরস্থানে বর্তমান ঠিকানা : ৬০/এ, ডিস্টিলারী রোড, গেন্ডারিয়া (ধুপখলা পুকুরের পূর্ব পাশে), যাত্রাবাড়ি, ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : ঐ ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : ঢাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ
Image of শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ
Image of শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: মনিরুল ইসলাম

হাসনাইন আহমেদ

দীন ইসলাম বেপারী

মাহামুদুর রহমান সৈকত

মো: শাহজাহান মিয়া

মো: রাকিব হাসান

মো: সোহাগ

মাওলানা খুবাইব আহমাদ

মো: মেহেদী হাসান

আব্দুল জব্বার

হাফেজ মোহাম্মদ জুবায়ের আহমাদ

ইমন হোসেন আকাশ

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo