জন্ম তারিখ: ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০২
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪
বিভাগ: খুলনা
পেশা : শিক্ষার্থী, শাহাদাতের স্থান : যশোর সদর হাসপাতাল।
জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন এক পর্যায়ে পরিণত হয় একদফা আন্দোলনে। শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ, দমন-পীড়ন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তীব্র ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। সরকার এই আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমনের চেষ্টা করলেও ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধ এবং একতাবদ্ধ লড়াই একসময় গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। অবশেষে, ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে দেশজুড়ে ছাত্রদের তুমুল আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এই অভ্যুত্থানে প্রাণ হারান বহু সাহসী তরুণ। যাদের মধ্যে শহীদ মো: সিফাত ফেরদৌস অন্যতম। সিফাতের দুই বোন—পারভীন সুলতানা দিপ্তি (৩০) এবং নাসরিন সুলতানা সুমি (২৭) বিবাহিত। সিফাত ছিল পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান এবং তার মা রওশনারা বেগমের আশ্রয়স্থল। শহীদ সিফাত ফেরদৌসের পরিবারে আয়ের উৎস ছিল তার প্রয়াত বাবা শহিদুল ইসলাম, যিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটাই সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। সিফাতের মা রওশনারা বেগম আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় সংসার চালিয়ে আসছিলেন। দুই বোন বিবাহিত হওয়ায় সিফাতই ছিলেন মায়ের শেষ ভরসা। যেভাবে শহীদ হয় ৫ই আগস্ট সকাল ১০টার দিকে সিফাত তার সহপাঠীদের সাথে যশোর শহরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। স্থানীয়দের কাছে থেকে জানা যায় কারফিউ চলাকালীন তারা একসাথে না গিয়ে আলাদা আলাদাভাবে শহরে গিয়ে পৌছায় । বিকেলে ৩ টার দিকে সিফাতের মা তার চাচাকে জানায় যে সিফাত যশোর গেছে এখনও ফিরেনি। তখন চাচা তাকে ২/৩ বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সে ফোন রিসিভ করেনা। পরে চাচা মোটরসাইকেল যোগে যশোর শহরে গিয়ে সিফাতের খোঁজ করতে থাকেন। জাবের হোটেলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা জেনে সেখানে গিয়েও তার খোঁজ করেন। এক পর্যায়ে সিফাতের ফুফাতো ভাই তাকে খবর দেয় সিফাত সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। তিনি মর্গে গিয়ে অনেক খোঁজাখুজি করে তার খোজ পান। থানা এবং সদর হাসপাতালে ফর্মালিটি শেষ করে মর্গে ঢুকে সিফাতকে সনাক্ত করেন । রাত ৯.৩০ এর দিকে তাকে এম্বুলেন্সযোগে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। পরদিন সকালে জানাজা ও দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। শহীদের ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : মো: সিফাত ফেরদৌস (২২) পেশা : শিক্ষার্থী ঠিকানা : শাখারীগাতি, ৬নং নরেন্দ্রপুর, যশোর সদর, যশোর জন্ম তারিখ : ০৭/০২/২০০২ পিতা : মৃত শহিদুল ইসলাম পিতার পেশা : ব্যাংকে চাকরি করতেন মাতার নাম : মোছা: রওশনারা বেগম (৫০) মাতার পেশা : গৃহিণী শহীদের বোন : ১) পারভীন সুলতানা দিপ্তি (৩০) ২) নাসরিন সুলতানা সুমি (২৭) পারিবারের সদস্য সংখ্যা : ০৫ জন পরামর্শ ১। শহীদ পরিবারের জন্য নিয়মিত ভাতার ব্যবস্থা করা ২। শহীদের মায়ের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা
নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করেছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে, মারে ও মরে। (সুরা তাওবা ৯:১১১)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে শহীদ হতে চায়, আল্লাহ তাকে শহীদের সাওয়াব দেন।” (সহীহ মুসলিম ১৮৮৮)




